1. abrajib1980@gmail.com : মো: আবুল বাশার রাজীব : মো: আবুল বাশার রাজীব
  2. abrajib1980@yahoo.com : মো: আবুল বাশার : মো: আবুল বাশার
  3. farhana.boby87@icloud.com : Farhana Boby : Farhana Boby
  4. mdforhad121212@yahoo.com : মোহাম্মদ ফরহাদ : মোহাম্মদ ফরহাদ
  5. shanto.hasan000@gmail.com : রাকিবুল হাসান শান্ত : রাকিবুল হাসান শান্ত
  6. masum.shikder@icloud.com : Masum Shikder : Masum Shikder
  7. shikder81@gmail.com : Masum shikder : Masum Shikder
  8. riyadabc@gmail.com : Muhibul Haque :

থামছে না বাসের অশুভ প্রতিযোগিতা

  • Update Time : রবিবার, ২১ মার্চ, ২০২১
  • ৪৪৪ Time View
ঢাকার একটি সড়কে বাসের প্রতিযোগিতা। ছবি: সংগৃহীত
সরকারের কোনো উদ্যোগই কাজে আসছে না, চুক্তিভিত্তিকের কারণেই এ প্রতিযোগিতা: শ্রমিক নেতৃবৃন্দ

সরকারি তিতুমীর কলেজের স্নাতকের (বাণিজ্য) দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র ছিল রাজীব হোসেন। ২০১৮ সালের ৩ এপ্রিল রাজধানীর কাওরান বাজার এলাকায় দুই বাসের রেষারেষিতে তিনি তার হাত হারিয়েছিলেন। ১৪ দিন পর ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিত্সাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান। একই বছরের ২৯ জুলাই বিমানবন্দর সড়কে দুই বাসের প্রতিযোগিতায় প্রাণ হারিয়েছিল দুই শিক্ষার্থী। দুই শিক্ষার্থীর প্রাণহানির ঘটনায় গড়ে উঠা নিরাপদ সড়ক আন্দোলনের পরিপ্রেক্ষিতে ২০১৮ সালের ১৯ সেপ্টেম্বর সড়ক পরিবহন আইনটি জাতীয় সংসদে পাশ হয়।

নিরাপদ সড়ক আন্দোলন ও সেই পরিপ্রেক্ষিতে সরকারের নানা উদ্যোগের পরও কোনো পরিবর্তন আসেনি। আগের মতোই রাজধানীতে বাসের ‘অশুভ প্রতিযোগিতা’ চলছে। সেই পুরোনো কায়দায় যাত্রীদের জীবন বিপন্ন করে প্রতিনিয়ত বাস-মিনিবাসের প্রাণঘাতী প্রতিযোগিতা চলছে। সড়কের নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করে প্রশাসনের সামনেই তারা এ কাজ চালিয়ে যাচ্ছে। আর এই প্রতিযোগিতার কারণেই দুর্ঘটনার শিকার হয়ে প্রতিনিয়ত প্রাণ হারাচ্ছেন যাত্রী, পথচারী এবং সাধারণ মানুষ। প্রাপ্ত তথ্যে জানা যায়, সম্প্রতি রাজধানীর বিমানবন্দর সড়ক, শ্যামপুর, তেজগাঁও, হানিফ ফ্লাইওভারে গণপরিবহনের অশুভ প্রতিযোগিতার কারণে নিহত হয়েছেন মোটরসাইকেল চালক, রিকশা চালক, কমিউনিটি পুলিশের সদস্যসহ আট জন। এ সময় আহত হয়েছেন ২০ জন। অপরদিকে কোনো গণপরিবহনেই মানা হচ্ছে না স্বাস্থ্যবিধি।

রাজধানী ঘুরে দেখা গেছে, গুরুত্বপূর্ণ বাস স্টপেজগুলোতে বাস চালকদের প্রতিযোগিতার মাত্রা বেড়ে গেছে। পেছন থেকে সামনে যাওয়া, কখনো পেছনের বাসকে সামনে যেতে বাধা দেওয়ার মতো ঘটনা স্বাভাবিক হয়ে গেছে। আর এগুলো বেশির ভাগই ঘটছে ট্রাফিক নিয়ন্ত্রকদের সামনেই। এরই মধ্যে সড়কে শৃঙ্খলা ফেরাতে রাজধানীর ১২১টি বাস স্টপেজের স্থান নির্ধারণ করেছিল ঢাকা মহানগর পুলিশের ট্রাফিক বিভাগ। এসব স্টপেজ ছাড়া অন্য কোথাও বাস না থামানোর নির্দেশ রয়েছে। কিন্তু সেই নির্দেশ অমান্য করে যত্রতত্র পরিবহন শ্রমিকরা যাত্রী ওঠাচ্ছে-নামাচ্ছে।

গণপরিবহন সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, অধিকাংশ বাস চালক আইন-কানুন মানছেন না। অধিক যাত্রী ও মুনাফার লোভে কে কার আগে যাবেন, এ নিয়ে চালকদের দৌরাত্ম্য বছরের পর বছর চলে আসছে। সড়কে শৃঙ্খলা আনতে হলে পদ্ধতিগত পরিবর্তন জরুরি।

একই কথা বলেছেন বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন সমিতির মহাসচিব খন্দকার এনায়েতউল্যাহ। তিনি বলেন, আমরা প্রতিনিয়ত প্রতি মিটিংয়ে মালিক ও শ্রমিকদের এ ব্যাপারে সতর্ক করে যাচ্ছি। পাশাপাশি করোনা ভাইরাসের ব্যাপারে স্বাস্থ্যবিধি মানারও নির্দেশ দিয়েছি। কিন্তু চালকরা অধিকাংশ ক্ষেত্রে এ নির্দেশ তোয়াক্কা করেন না। তবে পরিবহন নেতা বলেন, ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের মেয়রের নেতৃত্বে পাঁচটি কোম্পানির অধীনে সিটি সার্ভিসের বাস পরিচালনার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়রকেও এ পরিকল্পনার সঙ্গে যুক্ত করা হবে। এ পরিকল্পনা বাস্তবায়িত হলে সড়কে বিশৃঙ্খলা থাকবে না।

নিয়মিত যারা বাসে চলাচল করেন এমন কজন যাত্রী অভিযোগ করে বলেছেন, চালকদের এ অসুস্থ প্রতিযোগিতা থামানোর কেউ নেই। আর এ কারণেই রাজপথে সড়ক দুর্ঘটনায় মৃত্যুর মিছিলও বড় হচ্ছে। তারা বলছেন, রেষারেষি করে বাস চালাতে নিষেধ করলেও চালকরা শুনে না।

নগরীর বাড্ডা, কুড়িল বিশ্বরোড এলাকা ঘুরে দেখা যায়, ক্লাসিক ভিক্টর, রাইদা, আকাশ, তুরাগ, রইস, রাজধানী, স্মার্ট উইনার, অছিম ও প্রচেষ্টা পরিবহন ফাঁকা সড়কে যাত্রী তুলতে রেষারেষি করে বাস চালাচ্ছে। সামনের বাস না সরলে পেছনের বাসটা সজোরে ধাক্কা মারছে। শুধু এ বাসগুলো নয়, একই অবস্থা গুলিস্তান-বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউ সড়কে। শিকড়, বোরাক, আনন্দ কোম্পানির বাসগুলো চলাচল করে কোনো শৃঙ্খলা না মেনেই। মতিঝিলে এটিসিএল, এফটিসিএল, বাহনসহ বিভিন্ন কোম্পানির বড় বাসগুলো একটার পেছনে আরেকটা লেগে আছে। যাত্রাবাড়ী থেকে আসা ৮ নম্বর রুটের বাসসহ অন্যান্য রুটের মিনিবাস একটা আরেকটার সামনে পথরোধ করে দাঁড়িয়ে আছে। ট্রাফিক পুলিশের সামনেই প্রতিটি স্ট্যান্ডে বাস চালকরা বিশৃঙ্খলভাবে গাড়ি রাখেন, যাত্রী তোলেন। সিটগুলো যাত্রীতে পূর্ণ না হওয়া পর্যন্ত কেউ স্ট্যান্ড ছাড়তে চান না। যাত্রীদের চাপাচাপিতে বাসটি যখন অপর স্ট্যান্ডের দিকে ছুটে যায় তখন এর গতি থাকে বেপরোয়া। এক্ষেত্রেও কে কার আগে যাবে, তা নিয়ে ভয়ঙ্কর প্রতিযোগিতা চলতে থাকে। তখন সড়ক পারাপার হতে থাকা পথচারীদের নিরাপত্তার বিষয়টি গৌণ হয়ে পড়ে।

এ ব্যাপারে ভিক্টর ক্লাসিক পরিবহনের একজন চালক বলেন, চালক-হেলপার ও আমি এ তিন জন মিলে বাসটির মালিকের কাছ থেকে লিজ নিয়েছি। এজন্য প্রতিদিন ঐ মালিককে ১ হাজার ১০০ টাকা দিতে হয়। চাঁদা আরো ৯০০ টাকাসহ সব মিলিয়ে প্রতিদিন ২ হাজার টাকা খরচ। এরপর যা থাকে সেটা আমরা তিন জনে ভাগ করি। তিনি আরো বলেন, আমরা বাস চালাই। এতে মালিকের এক টাকাও লোকসান নেই। সন্ধ্যার পর তারা গুনে-গুনে টাকা বুঝে নেন। তাই যাত্রী তুলতে প্রতিযোগিতা না করলে আমরা খাব কী।

প্রায় একই কথা বলেছেন, ফুলবাড়িয়া বাস টার্মিনাল শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি নুরুল আমিন নুরু। তিনি বলেছেন, চুক্তিভিত্তিক বাস চলাচলের কারণেই চালকদের এ প্রতিযোগিতা। তিনি বলেন, আমাদের সংগঠনের পক্ষ থেকে আমরা নির্দেশনা দিলেও তা বাস্তবায়ন হচ্ছে না। তিনি বলেন, লকডাউনের পরবর্তী সময় এ প্রতিযোগতা ছিল না। কিন্তু সম্প্রতি এটা তীব্র আকার ধারণ করেছে।

সূত্র:ইত্তেফাক

আরও পড়ুনভোটের আগেই ইউপি চেয়ারম্যান ২৭ জন

Please Share This Post in Your Social Media

এই ক্যাটাগরির আরো নিউজ দেখুন..